My experience in Namibia - Botswana - Victoria Falls trip - Part 1
পর্ব ১
সময়টা তখন 2022'এর মাঝামাঝি। গোটা পৃথিবীটা সবে কোভিদ 19 মহামারীর কঠিন অসুখ থেকে একটু একটু করে সেরে উঠতে লেগেছে। পৃথিবীবাসীও স্বস্তির দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে এতদিনের বন্দীদশা থেকে মুক্তির আশে ঘরের বাইরে পা ফেলতে শুরু করেছেন... প্রথমে ধীরে ধীরে, তারপর বাঁধভাঙা স্রোতের মতো! মুক্ত আকাশতলে বুক ভরা অক্সিজেন নিয়ে জীবনের স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে পেতে সেই স্রোতে গা ভাসিয়ে দিলাম আমিও!
প্রথম ট্রিপে আইসল্যান্ড-ল্যাপল্যান্ড।তার কিছুদিন পরেই দ্বিতীয় ট্রিপে আফ্রিকার 'নামিবিয়া-বোতসোয়ানা-ভিক্টোরিয়া ফলস'এ নাম নথিভুক্ত করে ফেললাম ! মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে পরপর দু-দুটো ট্যুর যদিও পরিকল্পিত ছিল না।কিন্তু হ'য়ে গেল!আসলে দুটো ট্রিপই ছিল দারুণ আকর্ষণীয়! এর পরের কাজ হলো এই দেশগুলোর জানা-অজানা বিষয়ে আরো বেশী করে অনুসন্ধান চালানো!...
56 টি দেশ নিয়ে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশ এই আফ্রিকা!সেখানে কী নেই! মাইলের পর মাইল জুড়ে সাভানা তৃণভূমি! কোথাও গভীর জঙ্গল,সেখানে ভয়ংকর সব জন্তু-জানোয়ারদের অবাধ বিচরণ! তিন-তিনটি মরুভূমি (সাহারা,কালাহারি, ও নামিব মরুভূমি ), অগণিত নদী,পর্বত আর বিচিত্র ধরনের নানান আদিবাসী উপজাতিদের নিয়ে বৈচিত্র্যময় এই মহাদেশ!সাউথ আফ্রিকা, তানজানিয়া, কেনিয়া,মরক্কো, মিশর,উগান্ডা, মরিশাস, সেশেলস,জাম্বিয়া,জিম্বাবুয়ে আরো কতো জায়গার কাহিনী যে পর্যটন পত্রিকায় পড়েছি! কিন্তু মিশর বাদে আফ্রিকার আর কোথাও ভ্রমণের সৌভাগ্য হয়নি!
বৃহত্তর এই মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত 'নামিবিয়া, বোতসোয়ানা 'ট্রিপের সম্পূর্ণ জার্নিটাই যে অভিনব এবং দুঃসাহসিক এক অভিযান, সেকথা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন টীম ডিরেক্টর মি: পিনাকী মিত্র!
তাছাড়া, এই ট্রিপের আরও একটা বৈশিষ্ট্য হোলো, আমাদের 28 জনের গ্রুপে সহযাত্রী হিসেবে থেকেছেন চলচ্চিত্র জগতের উজ্জ্বল তারকা তথা কোম্পানির (TravelLive India) brand ambassador মি: সব্যসাচী চক্রবর্তী! সঙ্গে আছেন তাঁর সহধর্মিণী মিসেস মিঠু চক্রবর্তীও!! টীম ডিরেক্টর মি : পিনাকী মিত্র এবং টীম ম্যানেজার মি: অর্ণব চক্রবর্তী তো আছেনই পথপ্রদর্শকের ভূমিকায়!
যাত্রা শুরু হোলো দিল্লি ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে। 20 মে (2023)রাত আড়াইটার ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানে আমাদের টিকিট( 2:30 a.m.)। প্রথমে ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবা, তারপর সেখান থেকে কানেক্টিং বিমানে নামিবিয়ার রাজধানী উইন্ডহোকে পৌঁছাবো।... ডিপার্চারের অন্তত ঘন্টা চারেক আগে টার্মিনালে পৌঁছাতে বলা হয়েছে। অনেকেই তাই 19মে ফ্লাইটের টিকিট কেটেছেন। আমরা পোঁছাবো রেলপথে। তাই 18 মে হাওড়া-দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসে রওনা হয়ে 19 মে সকাল 10:10 'এ পৌঁছে গেলাম নিউ দিল্লি ! এরপর সারাটা দিনই হাতে! লাউঞ্জে একটু রেস্ট নিয়ে সন্ধ্যা 7:15 নাগাদ আবার এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে ঘন্টা খানেকের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম টার্মিনাল-3 তে! ততক্ষণে আমাদের সহযাত্রীরা কেউ কেউ পৌঁছে গেছেন টার্মিনালে! ওদের সাথে মিলিত হয়ে একটু নিশ্চিন্ত হওয়া গেল! 'নিশ্চিন্ত' হওয়ার কারণ , এই ধরনের বিদেশযাত্রায় স্টার্টিং পয়েন্টে উপস্থিত হওয়ার আগে প্রস্তুতি পর্বেরও একটা হ্যাপা থাকে! ধাপে ধাপে সেসব অতিক্রম করে টার্গেটে না পৌঁছানো পর্যন্ত টেনশনটা তাই চলতেই থাকে!তারপর মূল স্রোতে চলে এলে আর কোন চাপ থাকে না। তখন দলবদ্ধ ভাবে শুধুই স্রোতে ভেসে চলা!
রাত সাড়ে দশটার মধ্যে, কথামতো, গ্রুপের সকলেই জড়ো হলাম টার্মিনাল 3 তে । লাগেজ চেক ইন, ইমিগ্রেশনের পর্ব মিটে গেলে এবার স্ক্যানিং'এর জন্য চললাম। হঠাৎ মাঝপথে গ্রুপের সকলকে জড়ো হতে দেখে এগিয়ে গেলাম সেদিকে। দেখি, জমায়েতের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে দীর্ঘকায়, অল্পবয়সী, কেতাদুরস্ত এক ব্যক্তি! বুঝলাম, ইনিই সেই ব্যক্তি যিনি শুরু থেকেই ট্রাভেল লাইভ ইন্ডিয়ার 'নামিবিয়া, বোতসোয়ানা,ভিক্টোরিয়া ফলস' ট্রিপের সমস্তরকম কার্যপ্রণালীর পূর্ণ সহায়তা করে উৎসাহ দিয়ে এসেছিলেন! ইনি নামিবিয়ার হাই কমিশনার এবং ভারতে নামিবিয়ার রাষ্ট্রদূত মি: গ্যাব্রিয়েল সিনিম্বো। যাত্রা প্রাক্কালে নামিবিয়ার তরফ থেকে আমাদের অর্থাৎ ট্রাভেল লাইভ ইন্ডিয়ার গ্রুপকে স্বাগত জানাতে তিনি স্বয়ং উপস্থিত হয়েছেন দিল্লি এয়ারপোর্টে ! প্রথম সাক্ষাতে উভয়পক্ষই আপ্লুত! তারপর সৌজন্য বিনিময় ও সাদর- সম্ভাষণে কাটলো কিছুটা সময়! সবশেষে উভয় দেশের জাতীয়-পতাকাসহ গ্রুপ ছবি তুলে প্রথাগত যাত্রার সূচনা করা হলো! এগিয়ে গেলাম পরবর্তী ধাপ-- ইমিগ্রেশন, সিকিউরিটি চেক-ইন ইত্যাদির জন্য।;
সমস্ত রকম ফর্মালিটিস সেরে এয়ারবাসের নির্দিষ্ট আসনে গুছিয়ে বসলাম ! অল্প সময়ের মধ্যেই ফ্লাইট উড়বে!ডিপার্চার টাইম রাত 2:30 a.m. কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও দেখছি ফ্লাইট নট- নড়নচড়ন! বোঝা যাচ্ছে, কিছু একটা গণ্ডগোল তো হয়েইছে ! ঘড়ির কাঁটা নাগাড়ে ঘুরে যেতে লাগলো! শেষমেশ ঘোষণা হলো,'যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে ফ্লাইট ছাড়তে দেরী হচ্ছে'! কিন্তু আরও কত দেরী হবে!! এদিকে রাত পেরিয়ে ভোর হয় হয় !
To be continued…
©Mina Sarkar
Share this article :